বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪৬ অপরাহ্ন

Notice :
Welcome To Our Website...
News Headline :
মীরবক্সটুলায় নার্সদের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ ও গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন তরঙ্গ সমাজ কল্যাণ সংস্থা সিলেটের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন তালুকদার বাড়ি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে ঈদ সামগ্রী ও অর্থ বিতরণ নির্বাচন বিলম্বিত হলে ফ্যাসিবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে —-আব্দুল হাকিম চৌধুরী স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের ইফতার ও দোয়া মাহফিল মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সিলেট জেলা মহিলা দলের দোয়া ও ইফতার মাহফিল নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ও চিহ্নিত ছিনতাইকারী গ্রেফতার জগন্নাথপুর- শান্তিগঞ্জে ইফতার পার্টি নিয়ে বিএনপির কয়ছর বলয়ের এলাহী কান্ড ! ডেল্টা হসপিটালের উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল সম্পন্ন উলামায়ে কেরামদেরকে জাতির নেতৃত্বে এগিয়ে আসা উচিৎ ———ড. নূরুল ইসলাম বাবুল


আড়ি পাতার সুযোগ থাকবে স্টারলিংকেও 

আড়ি পাতার সুযোগ থাকবে স্টারলিংকেও 

নিউজ ডেস্কঃ স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট-সেবা চালু হলেও তাতে আইনানুগ আড়ি পাতার সুযোগ রাখতে চায় সরকার। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক বাংলাদেশে এলে সেখানেও আইনানুগ আড়ি পাতার সুযোগ থাকবে।
সরকার বাংলাদেশে স্টারলিংকের সেবা চালু করতে চায়। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস উইং গত শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা তাঁর হাই রিপ্রেজেন্টেটিভখলিলুর রহমানকে স্টারলিংকের মূল প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সমন্বয় করে আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে বাংলাদেশে স্টারলিংক চালুর জন্য প্রয়োজনীয় সব কাজ শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব সম্প্রতি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য আইনানুগ আড়ি পাতা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি পন্থা। টেলিযোগাযোগ-সংক্রান্ত নতুন আইনে
■ টেলিযোগাযোগ আইনের খসড়ায় ইন্টারনেট বন্ধের সুযোগ রাখা আছে।
■ তবে কখন ইন্টারনেট বন্ধ রাখা যাবে, তা ঠিক করতে হবে এসওপি।
তা থাকবে। স্টারলিংকও এ ক্ষেত্রে আপত্তি করবে না বলে মনে করেন তিনি।
ইন্টারনেট বন্ধ করার সুযোগ রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে ফয়েজ আহমদ বলেন, সরকারের মনোভাব হলো ইন্টারনেট বন্ধের সুযোগ না রাখা। খসড়ায় প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন করবে সরকার।
বাংলাদেশে ইন্টারনেট-সেবাসংক্রান্ত দুটি বড় বিতর্ক রয়েছে। একটি হলো আড়ি পাতার সুযোগ। অন্যটি ইন্টারনেট বন্ধের সুযোগ রাখা। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার যথেচ্ছ আড়ি পেতে বিরোধী মত ও সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলকে দমন করত।
অন্যদিকে সরকারবিরোধী আন্দোলন দমন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচিকেন্দ্রিক ইচ্ছেমতো ইন্টারনেট বন্ধ করা হতো।
সর্বশেষ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সব ধরনের ইন্টারনেট বন্ধ করে নতুন নজির তৈরি করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। জুলাই মাসে টানা ৫ দিন পুরো দেশ ইন্টারনেটবিহীন ছিল এবং টানা ১০ দিন মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। এর বাইরে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপরও ছিল নিষেধাজ্ঞা। আগস্ট মাসে সরকার পতনের ঠিক আগেও ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছিল। আর নিয়মিত আড়ি পাতা হতো। স্টারলিংকের সেবা বাংলাদেশে চালুর খবরে কৌতূহল তৈরি হয়েছিল যে এ ক্ষেত্রেও ইন্টারনেট বন্ধ এবং আড়ি পাতার সুযোগ থাকবে কি না।
আইনে কী আছে
দেশের সংবিধানের ৪৩ নম্বর অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলা, জনসাধারণের নৈতিকতা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বাধা নিষেধ-সাপেক্ষে প্রত্যেক নাগরিকের চিঠিপত্রের ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার দেওয়া হয়েছে। যদিও টেলিযোগাযোগ আইনের ৯৭(ক) ধারায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার স্বার্থে আড়ি পাতা যাবে।
তবে কার কার ফোনে আড়ি পাতা হবে, কী কী প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে, নজরদারি সংস্থা আড়ি পাতার পর তথ্যাদি কোন কোন সংস্থাকে দিতে পারবে,
নাগরিক সুরক্ষা ও মানবাধিকার নিশ্চিত কীভাবে করা হবে, আড়ি পাতা নিয়ে কার কাছে জবাবদিহি করা হবে, কিসের ভিত্তিতে আড়ি পাতা হবে-এসব ক্ষেত্রে নীতিমালার ঘাটতি আছে।
স্টারলিংকের মতো স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট-সেবা দিতে সরকার ‘নন-জিওস্টেশনারি অরবিট (এনজিএসও) স্যাটেলাইট সার্ভিসেস অপারেটর’ শিরোনামে খসড়া নির্দেশিকা করেছে। এতে বলা আছে, সেবাদাতাদের টেলিযোগাযোগ আইন-২০০১ মেনে চলতে হবে। অর্থাৎ আইনানুগ আড়ি পাতার সুযোগ রাখতে হবে। এ ছাড়া নজরদারি সংস্থাকে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত দেওয়ার ব্যবস্থাও থাকতে হবে।
নির্দেশিকার পাশাপাশি টেলিযোগাযোগ আইনের খসড়া নিয়েও কাজ চলছে। এ খসড়ায়ও ইন্টারনেট বন্ধ ও আড়ি পাতার সুযোগ রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সূত্র বলছে, ইন্টারনেট সেবাদাতা অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আইনের যেসব বিধান রয়েছে, তা স্টারলিংকের মতো স্যাটেলাইট সেবাদাতাদের জন্যও প্রযোজ্য হবে। বিটিআরসি গত ১৪ জানুয়ারি আইনের খসড়া মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
ইন্টারনেট বন্ধের সুযোগের বিষয়ে কী আছে
টেলিযোগাযোগ আইন-২০০১-এ বলা আছে, রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা জারি করলে অথবা সরকারের বিবেচনায় রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার স্বার্থে সরকার টেলিযোগাযোগ সেবা স্থগিত বা সংশোধন করতে পারবে। এই সুযোগ নিয়েই বারবার ইন্টারনেট বন্ধ করা হতো। এমনকি তা স্বীকারও করা হতো না।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ইন্টারনেট বন্ধের বিধানে পরিবর্তনের প্রসঙ্গ উঠেছিল। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ থেকে বিটিআরসিকে একটি চিঠিতে সারা দেশে একযোগে ইন্টারনেট বন্ধ না করা, আইনে সংশোধন ও পরিচালনাপদ্ধতির মানদণ্ড (এসওপি) নির্ধারণ করা বিষয়ে কাজ করতে বলা হয়েছিল।
টেলিযোগাযোগ আইনের নতুন খসড়ায় ইন্টারনেট বন্ধের সুযোগটি আগের মতোই রাখা হয়েছে। বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল জম (অব.) মো. এমদাদ উল বারী ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা চান ইন্টারনেট বন্ধের সুযোগ না থাকুক। তবে পরিস্থিতি তৈরি হলে সেটা বন্ধ ন. কীভাবে হবে, আদেশ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ কারা হবে, নির্দেশ কীভাবে আসবে, সেসব নিয়ে একটি এসওপি তৈরির জন্য মন্ত্রণালয় বলেছে। সেটা নিয়ে কাজ হবে। যে
বিটিআরসি সূত্র বলছে, ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে নতুন সরকার যে সিদ্ধান্তই নিক, সেটা সবার ক্ষেত্রে সে একই হবে। অর্থাৎ স্টারলিংকের জন্য আলাদা কোনো সুযোগ থাকবে না। এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
ইন্টারনেট বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার • কাউন্সিলের নির্দেশিকা অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মালয়ার আইন ও উদীয়মান প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক – মুহাম্মদ এরশাদুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ■ আধুনিক ব্যবস্থায় সরকারগুলো নিরাপত্তাকে গুরুত্ব ■ দিয়ে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কিন্তু সেখানে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড, মানবাধিকারকে প্রাধান্য দিতে
হয়। তিনি বলেন, ইন্টারনেটের সঙ্গে মানুষের জীবনের প্রায় সবকিছুই জড়িত। এই সেবা বন্ধের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিচারিক প্রক্রিয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি যেন আদালতে যেতে পারেন, সে সুযোগও রাখতে হবে।
আলোচনায় স্টারলিংক
বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের বাজার ধরার চেষ্টায় রয়েছে বৈশ্বিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক। বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মহাকাশবিষয়ক সংস্থা স্পেসএক্সের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান স্টারলিংক। স্টারলিংক কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে ইন্টারনেট-সেবা দেয়।
ইলন মান্তের সঙ্গে ১৩ ফেব্রুয়ারি ভিডিও কলে স্টারলিংক প্রসঙ্গেও আলোচনা করেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ ছাড়া ১৯ ফেব্রুয়ারি ইলন মাঙ্ককে এক চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানান এবং স্টারলিংক স্যাটেলাইট সেবা চালুর প্রভাব দেন।
সরকার বলছে, স্টারলিংক বাংলাদেশের শহর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের মতো পরিস্থিতিতে উচ্চগতির ইন্টারনেট-সেবা দিতে পারবে। মানসম্মত সেবা দান করায় তারা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, ফ্রিল্যান্সার, বেসরকারি সংস্থাসহ (এনজিও) বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ধরতে পারবে।
স্পেসএক্সের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশে তাদের কার্যক্রম রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভুটানে প্রথম স্টারলিংকের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সুযোগ থাকতে পারে, তবে…
তথ্যপ্রযুক্তি খাত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রস্তাব হলো, রাষ্ট্রের প্রয়োজনে ইন্টারনেট বন্ধ ও আড়ি পাড়ার সুযোগ থাকতে পারে। তবে তা হতে হবে স্পষ্ট এবং আইন দ্বারা নির্দিষ্ট, তা সরকারের ইচ্ছাধীন হওয়ার সুযোগ নেই।
ইন্টারনেট বন্ধের যথেচ্ছ ক্ষমতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির প্রথম আলোকে বলেন, ব্যক্তির ইচ্ছার ওপর ইন্টারনেট বন্ধের ক্ষমতা যেন না থাকে। বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী বৈশ্বিক সংস্থা অনানুষ্ঠানিক আলাপে বাংলাদেশের ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে উদ্বেগ জানায়। আস্থার একটি সংকট তৈরি হয়ে গেছে।
অধিকারের প্রশ্নে ইন্টারনেট ‘শাটডাউন’কে (বন্ধ) বেআইনি ঘোষণা করা উচিত বলে মনে করেন তথ্যব্যবস্থায় প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ডিজিটালি রাইটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিরাজ আহমেদ চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, যুদ্ধ বা সন্ত্রাসবাদী ঘটনার মতো পরিস্থিতিতে মানুষের জীবন রক্ষার প্রয়োজনে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণের মতো সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে। সেটিকেও প্রয়োজনীয়তা, আনুপাতিকতা ও আইনি মানদণ্ডের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। একই কথা প্রযোজ্য আড়ি পাতার ক্ষেত্রে।
মিরাজ আহমেদ বলেন, আইনে ব্যাখ্যা ও স্পষ্ট করে কিছু না থাকলে ইচ্ছেমতো প্রয়োগ ও অপব্যবহারের সুযোগ থাকে।
তথ্য সূত্রঃ প্রথম আলো।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © sylhetbanglanews24.com
Design BY Web Home BD
sylhetbanglanews24