সিলেট বাংলানিউজ২৪.কমঃ সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী এনডিসি বলেছেন, পূর্ব পাকিস্তান ছিল আয়ের মূল উৎস। আর পশ্চিম পাকিস্তানে আয়ের কোন উৎস ছিল না। তারা আমাদের অর্থ নিয়ে করাচি ইসলামাবাদে বড় বড় রাস্তা করেছে। আমাদের বাঙ্গালিদের আরমীতে চাকরী দেয়া হত না বেশি, নগণ্য কয়েক জনকে চাকরী দিত তারা। তারা আমাদের উপর তাদের উঁর্দু ভাষা চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল জোর পূর্বকভাবে। আর সেই সময় তার প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে প্রতিবাদ গড়ে তোলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পাকিস্তানীরা আমাদের দেশের মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে এবং আমাদের মা বোনদের উপর অনেক নির্যাতন চালিয়েছে। আমি চাই আমার সন্তান এবং আমাদের নতুন প্রজম্ম মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে জানুক কিভাবে আমাদের এই দেশকে স্বাধীন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে সিলেট নগরীর নজরুল অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন প্রকল্প জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং জেলা প্রশাসন সিলেট এর সহযোগিতায় নতুন প্রজম্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদেরকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধকালীন বীরত্বগাথা শুনানোর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
তিনি আরো বলেন, পাকিস্তানীরা সবকিছুতেই বৈষম্য গড়ে তোলে। যার ফলে আর তার প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সারা দিয়ে বাঙ্গালীরা। আর মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অকুতোভয়ের ফলেই আজকে আমরা একটি স্বাধীন সার্বোভৌমত্ব একটি দেশ পেয়েছি।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে নিজের জীবনকে বাজি রেখে নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে তারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। আজকে মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশের সকল ধরনের অনুষ্ঠানে সর্বোচ্ছ সম্মান ও স্বীকৃতি দিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকে মুক্তিযোদ্ধাদের সকল ধরনের সহযোগিতা ও ভাতা প্রদান করছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই আজকে আমরা গর্বিত আমাদের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের এত সম্মান দেয়ার জন্য। একজন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে যে দেশপ্রেম, যে ভালোবাসা ছিল তারা কখনো মৃত্যুকে ভয় করেনি। আমাদের আগামীর প্রজম্মদেরকে এই মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে হবে, দেশের কথা জানাতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের কথা জানাতে হবে। আমার পিতা একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমি গর্বিত। আমার পিতার শরীরে এখনো একটি বুলেট রয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি চেয়ার রাখা হবে তাদের জন্য সম্মান জানিয়ে এবং সিলেট সার্কিট হাউজের একটি কক্ষ সংরক্ষণ রাখতে চাই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য। এছাড়াও সরকারি বেসরকারি সকল আবাস্থলে মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্ছ মর্যাদা দেয়ার জন্য আমরা প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এসময় তিনি উপস্থিত সকল শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানান।
মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন বিষয় ও মুক্তিযুদ্ধ কিভাবে যুদ্ধ করেন তাদের অভিজ্ঞতার কথা নিয়ে আলোচনা করেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বীরমুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চক্তবর্তী জুয়েল, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভবোতষ রায় বর্মণ রানা, সিলেট সদর উপজেলার কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইরশাদ আলী, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তাবায়নের প্রকল্প পরিচালক ড. মোঃ নূরুল আমিন। জেলা কালচারাল অফিসার বরণ দাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মো. মোবারক হোসেন এনডিসি। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ফাহিম আহমদ। গীতা পাঠ করেন সৌনক দাস।
Leave a Reply